Friday, February 20, 2009

আল্লাহ্‌র প্রতি মদনের চিঠি[প্রথম অংশ]

মাসুদ রানা

সুকুবা, জাপান

আল্লাহ্‌র প্রতি মদনের চিঠি

[প্রথম অংশ]


প্রিয় আল্লাহ্‌,

সবিনয় বিনীত পূর্বক জানাইতেছি যে, আমার নিন্মোক্ত যোগ্যতা সম্পন্ন পাত্রী প্রয়োজন।

১.পাত্রীকে ৫ফুট২-৩ ইঞ্চি লম্বা হইতে হইবে। ৫ ফুট ১ হইলেও কোনরকমে চলিবে, কিন্তু ইহার নিচে হওয়া যাইবে না।

২. গায়ের রঙ অবশ্যই ফর্সা হইতে হইবে। ইহাতে কোন রকম ছাড় দেয়া যাইবে না।

৩.পাত্রীর চোখ, নাক অবশ্যই সুন্দর হইতে হইবে। হরিণ চোখ প্রধাণ্য পাইবে। নাক মোটা, চ্যাপ্টা, খাটো, বেশী উঁচু কোনটাই হওয়া যাবে না। চেহারা অবশ্যই রূপসী পর্যায়ের হইতে হইবে। ঐশ্বরিয়া রায় ১০০ পাইলে আমার পাত্রীকে ৯০ তো পাইতেই হইবে।

৪. পাত্রীকে স্লিম হইতে হইবে। মোটা কিংবা শুকনা হওয়া যাবেই না।

৫. চুল ঘন, লম্বা ও সিল্কি হইতে হইবে। হাঁটা সুন্দর হইতে হইবে। হাসি খুবই সুন্দর হইতে হইবে।

৬. পাত্রীর বয়স ২৩ হইতে হইবে. ২২ হইলেও বিবেচনা করিয়া দেখিব। আমার বয়স যেহেতু ২৮, সেই কারণে ৫ বছর পার্থক্যই সবচাইতে ভাল দেখাইবে।

৭. পাত্রীকে কথায় চটপটে হইতে হইবে। রসিকতা করিতে এবং রসিকতা বুঝিতে পারিতে হইবে।

৮. পাত্রীকে অনার্স ২য় কিংবা ৩য় বর্ষে পড়িতে হইবে। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী প্রধাণ্য পাইবে। ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হইলে আরো ভাল হইবে। এতে কিরিয়া আমার ছেলেমেয়েদেরও মেধাবী হইবার সম্ভাবনা বাড়িবে।

৯. পাত্রীকে নম্র, ভদ্র হইতে হইবে। আমার পরিবারকে নিজের পরিবার বলিয়া মানিয়া লইতে পারিবে, এমন পাত্রী হইতে হইবে।

১০. মেয়ের ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো হইতে হইবে। শুধু মেয়ের বাবা মা নহে, তাহার চাচা, মামা, খালা, খালু সবাইকেই যোগ্যতাসম্পন্ন হইতে হইবে- তাহাদিগকে কালচার বুঝিতে পারিতে হইবে।


আল্লাহ্‌, উপরের যোগ্যতা যদিও খুব বেশী নহে, তাহা হইলেও, গত ৩ বছর আমার মা-বাবা, খালা-খালু, চাচা-চাচী সবাই মিলিয়া খুঁজিয়াও একটা মেয়ে পছন্দ করিতে সক্ষম হয় নাই। সেই কারণে, নিরুপায় হইয়া, আপনার কাছে আমার আকুল আবেদন, উপরের যোগ্যতা সম্পন্ন পাত্রী তৈয়ার করিয়া অনতিবিলম্ব ফেরেশ্‌তা জীবরাইলের মারফত প্রেরণ করিয়া এই বান্দাকে বাধিত করিবেন।


আপনার একান্ত অনুগত

মদন

বাংলাদেশ




মদন চিঠিটা পোষ্ট করার সময় ভাবল বাংলাদেশ থেকে নাকি সাধারণ চিঠি হারিয়ে যায়, তাই রেজিষ্ট্রার চিঠি পাঠানোর জন্য, জীবরাইলকে মোবাইলে ফোন করল। জীবরাইল আল্লাহ্‌র কাছে চিঠিটা নিয়ে যাওয়ার জন্য পরদিন মদনের কাছে আসল। জীবরাইল মদনকে ভাল করে চিনত, অনেকটা বন্ধুর মতই। তাই কি চিঠিতে কি লিখেছে আর কৌতুহল সামলাইতে না পেরে জিজ্ঞেস করে ফেলল যে চিঠিতে মদন কি লিখেছে। মদনও জীবরাইলকে বন্ধু মনে করত বলে চিঠিটা খুলেই পড়তে দিল। জীবরাইল খুবই মনোযগ দিয়ে চিঠিটা পড়ল এবং তার পরের কথোপকথন নিচে দেয়া হল। আমি ঐদিন পোষ্ট অফিসেই ছিলাম। পাশে দাঁড়িয়ে ওদের কথাবার্তা শূনতে শুনতে আমার মনে যেসব চিন্তার উদয় হয়েছে সেইগুলো ওদের কথাবার্তার মাঝে উল্লেখ করব।


জীবরাইলঃ মদন, তুমি কি মনে কর, এমন মেয়ে বাংলাদেশ কেন, পৃথিবীতে আছে?

মদনঃ নাই মনে হয়। সেই কারনেই তো আল্লাহ্‌কে প্যাকেজ অর্ডার দিচ্ছি।

জীবরাইলঃ মদন, তোমার বিয়ে করার উদ্দেশ্য কি?

মদনঃ বয়স ২৮ হয়েছে। এইটাই নাকি বিয়ের জন্য পারফেক্ট বয়স। সবাই তাই বলে। আমিও তাই মনে করি। তাই এখন বিয়ে করব।


তোমার বিয়ের বয়স হয় নাই

হায় আল্লাহ্‌, মানুষ এমন কেন হয়? তুমি জানো আল্লাহ্‌, এই ধরনের অজ্ঞতা আমাকে কত কষ্ট দেয়।

বিয়ের বয়স। বাংলাদেশের মানুষ হয়তো ২৯ কে মাঝে রেখে ২৮-৩০ কে বিয়ের বয়স ধরে। যদি জিজ্ঞেস করি, কেন? কোন ঊত্তর দিতে পারে না। কিন্তু আমি যখন ২৪ এ বিয়ের কথা বললাম, সবার মুখে একই কথা, বিয়ের বয়স হয় নাই। মানে কি? ও আল্লাহ্‌, কে তাদেরকে বিয়ের বয়স ঠিক করে দিতে কে বলেছে? তুমি তো কোরানে কখনো বলো নাই। হাদীসে নাই। তাহলে?


হাদীসে রাসুলুল্লাহ্‌ বলেছেন, যখনই বৌয়ের দেখাশোনা করার যোগ্যাতা হবে তখনই বিয়ে করতে।কারো সেই যোগ্যতা হয় ১৮ তে, কারও হয় ২৪ এ, কারো হয় ৩০ এ, কারো হয় ৩৫ এ আর কারো ৪০ এও হয় না, অলস ধরনের লোক হলে। তাহলে কেন এই ২৮-৩০ ফিক্সড্‌ করে দেয়া?!


বিয়ের কোন বয়সই নাই, তাহলে মানুষ কেন এই কথা বলে? আল্লাহ্‌ যেখানে বিয়ের কোন বয়স দেন নাই, সেইখানে এরকম ফিক্সড্‌ করে বয়স ঠিক করে দেয়া আমার কাছে আল্লাহ্‌র সাথে অভদ্রতার শামিল মনে হয়।


নিজে পারফেক্ট মেয়ে চাই, কিন্তু আমরা নিজেরা কি?

মদন যদি নিজের দিকে একটু তাকিতে দেখত, তাহলে দেখতে পেত তার এবং তার ফ্যামিলীর কত লিমিটেশন আছে। মদন যদি টম ক্রুযের মত হ্যান্ডসামও হয়, বিল গেট্‌সের মত ধনীও হয়, আইনষ্টাইনের মত জ্ঞানী হয়, তা হলেও মদনের মাঝে অনেক অনেক লিমিটেশন আছে। টম ক্রুজ, আইনষ্টাইন, বিল গেট্‌স হলেও তো আমরা ঐরকম সৌন্দর্য আশা করতে পারি না! পারি?


সৌন্দর্য

আল্লাহ্‌ কোরানে বলেছেন, তিনি মানুষকে অনেক সুন্দর গঠনে তৈরী করেছেন। কিন্তু আমি কিসেকে সৌন্দর্য হিসেবে ধরব? মানুষ মন এবং শরীর মিলিয়েই সুন্দর। শুধু শরীর দিয়ে সৌন্দর্যের বিচার করলে মানুষকে অপমান করা হয়। কিন্তু মদনের মত মানুষের সংখ্যাই বেশী বাংলাদেশে। তাই আমিও যদি ধরে নিই, সৌন্দর্য শুধু শারীরিক, তাও কিভাবে সৌন্দর্যের স্ট্যান্ডার্ড ধরব? জাপানীরা জাপানিদের কাছে সুন্দর; আমি জাপানে থাকি বলে জাপানিদের আমার কাছেও সুন্দর লাগে, কিন্তু দেশে থাকতে লাগত না। আর আমাদের দেশের মানুষের কাছে জাপানী হলে, তা সে যতই সুন্দর হোক না কেন, সুন্দর লাগে না। তাহলে? আমি অনেক ভেবেছি, অনেক! সমাধানের জন্য।


একদিন ট্রেনে বসে আছি, হুট করে সমাধানটা মাথায় চলে আসল। ট্রেনে একটা নিগ্রো কাল মেয়ে দেখেছিলা, ২৮-২৯ বয়স হবে হয়তো। কিন্তু কেন জানি, আমার কাছে মনে হল, আরে মেয়েটা তো সুন্দর। নিজেই আশ্চর্য হয়েছি, এরকম মনে হওয়ার কারণে। আমি জানি, মূর্খরা হাসতেছে আমার কথা শুনে। কিন্তু ওরে মূর্খ, মানুষ দূরে থাকুক, একটা গাছের দিকে মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে দেখো, মুখ থেকে এমনিতেই বের হয়ে যাবে, ও আল্লাহ্‌, তুমি মহান!


আমার মতে প্রত্যেকটা মানুষ, তা সে যে দেশেরই হোক, যেরকম গায়ের রঙই হোক, যেরকম চোখই হোক, যেরকম চুলই হোক, আল্লাহ্‌ তাকে যা দিয়েছেন, তাতে সে সুন্দর। সে কালো হোক, জাপানি হোক, বাংলাদেশী হোক, সাদা হোক। একটা ঊদাহরণ দিই, যদি কেউ কোন মানুষকে তার উচ্চতার জন্য, তার গায়ের রঙ এর জন্য, তার নাক, চোখ এর জন্য অসুন্দর বলে তাহলে সেইতা হচ্ছে অমানবিকতা। এবং আল্লাহ্‌কে অপমান করা। কিন্তু সে যদি নিজে নিজের যত্ন না নেয়, বা নিজেকে নিজে অসুন্দর বানায়, তাহলে তাকে অসুন্দর বলা যায়। যেমন, আল্লাহ্‌ তাকে যে চুল দিয়েছেন তার যত্ন নিলে হয়তো চুল ভাল থাকতো, তখন কেউ তাকে চুলেত জন্য আসুন্দর বলতে পারে। কিংবা কোন মানুষ যদি নিজে মোটা হয়ে যায়, তাহলে মোটার জন্য মানুষ তাকে অসুন্দর বলতে পারে। এককথায়, যা আল্লাহ্‌র দেয়া, যাতে মানুষের হাত ছিল না, তাতে প্রত্যেক মানুষ সুন্দর। কিন্তু যাতে তার হাত ছিল, কিন্তু সে নিজের সৌন্দর্য নিজে নষ্ট করেছে, তাহলে তাকে অসুন্দর বলা যায় হয়তো, যেমন সে যদি ভূড়ি বানায়, তাহলে সে অসুন্দর। আমার এই থিয়োরী ওইদিনই ট্রেনে বসে বসে পুরো করি নাই। আজকে আমি পরিষ্কার বুঝতে পারছি, কেন ঐদিন ট্রেনে ওই কালো মেয়েটাকে আমার সুন্দর লেগেছিল। কারণ, আল্লাহ্‌ তাকে যা দিয়েছিলেন সে তার যত্ন নিয়েছিল, নিজের সৌন্দর্য নিজের হাতে নষ্ট করে নাই। ঐদিন কালো মেয়েকে সুন্দর মনে হওয়াতে অবাক হয়েছিলাম। কিন্তু এখন আর হই না!




জীবরাইলঃ আচ্ছা মদন, মেয়ে ফর্সা না হলে চলবেই না লিখেছ। কেন?

মদনঃ কেন আবার কি? ফর্সা ছাড়া বিয়ে করা যায় নাকি!

জীবরাইলঃ মদন, আমি যতদুর জানি, তুমি র‌্যাসিজমে বিশ্বাস করো না এবং র‌্যাসিজম ঘৃণা কর।

মদনঃ হ্যাঁ, করি।

জীবরাইলঃ তাহলে তুমি যা করছ, তা কি? ওয়েষ্টার্ণরা করলে তাও কিছুটা হয়তো মানায়। কারণ, ওদের গায়ের রঙ সাদার মত ফর্সা, আর নিগ্রদের কালো। কিন্তু বাংলাদেশী ফর্সা,শ্যামলা আর কালোর মাঝে তো ১৮, ১৯ আর ২০ এর তফাৎ। তাহলে কি তোমাকে ওয়েশটার্ণদের চেয়ে অনেক বেশী র‌্যাসিষ্ট মনে হয় না?

মদনঃ ধুর, বেশী বক। যাই হোক আমার ফর্সা বৌ লাগবেই।

জীবরাইলঃ তুমি যেটা বিশ্বাস করো যে ঠিক না, অথচ নিজের বেলায় সেইটাই করো? কি ধরণের ব্যক্তিত্ত্ব তোমার? তোমার তো পার্সোনালিটিই নেই!

মদনঃউম্‌ম্‌


জীবরাইলঃ মদন, তুমি বলেছ, তোমার সাথে মেয়ের বয়সের পার্থক্য ৫ বছর হলে পারফেক্ট। কেন?

মদনঃ মদন, কেন মানে? এইটা তো সবায়ই জানে। আর ৫ বছর গ্যাপ হলে আন্ডারস্ট্যান্ডিং ভাল হয়।

জীবরাইলঃ কেন ভাল হয়, একটু বুঝিয়ে বলবে?

মদনঃ আন্ডারস্ট্যান্ডিং ভাল হয়, সবাই জানে।

জীবরাইলঃ সবাই জানে বুঝলাম, কিন্তু কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ, কোন শক্ত যুক্তি, কোন মেডিকেল বা বায়োলিজিক্যাল প্রমাণ, কোরানের কোন বেইজএরকম কিছু আছে এর পিছনে?

মদনঃ না, তা মনে হয় নাই।

জীবরাইলঃ তাহলে, কেন বলছ?


৩ থেকে ৫ বছরের গ্যাপ

বিশ্বাস কর, এই গ্যাপের ধারনার পিছনে কোন যুক্তি নাই। মানুষের শুধু মনে হয়, যে এই গ্যাপ থাকা আবশ্যক। নিজের ফ্যামিলীর দিকেই তাকিয়ে দেখো, নিজের বাবা মায়ের বয়সের গ্যাপ দেখো, নিজের বোন-দুলাভাই এর গ্যাপ দেখো, নিজের খালা-খালু, মাম-মামী এদের বয়সের গ্যাপ দেখোআমার মনে হয় না, খুব বড় কোন সমস্যা হয়। যদি হয়ও, তাও অন্য কোন কারনে হয়তো। ঐ ৩ বছর কিংবা ৫ বছরের গ্যাপের ধারণাটা কেন তাহলে?


বড় ভাইয়ের বিয়ে হয়ে নেক আগে, ছোট বোনের বিয়ে দিয়ে নিই আগে

দুনিয়াতে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যেখানে বড় ভাইয়ের আগে ছোট ভাইয়ের বিয়ে হয়েছে, বড় বোনের আগে ছোট বোনের বিয়ে হয়েছে; কোনদিনই দুনিয়ার কিছু উল্টিয়ে যায় নি। সবই ঠিকমত চলে এসেছে। তাহলে মানুষেরা কেন একথা বলে বড় ভাইয়ের বিয়ে আগে হোক? কেন বলে? কার ভয়ে এই কথা বলে? মানুষের কথার ভয়ে? ওরে পাগল, মানুষের কথাকে ভয়, যেখানে আল্লাহ্‌ কোন বাধা দেন নাই। কাউকে যদি জিজ্ঞেস করি, কেন, বড় ভাইয়ের আগে ছোট ভাইয়ের বিয়ে দেয়া যাবে না? উত্তরে শোনা যায়, কেমন দেখায়, কিংবা লোকে কি ভাববে, কিংবা কেউ করে নাকি এমন, কিংবা বড় ভাই কষ্ট পাবে। হাস্যকর! আসলেই হাস্যকর সব কারণ। সত্যি বলছি, সব ছেলে এবং মেয়েকে, বুকে হাত দিয়ে বলুন, ছেলে হয়ে মেয়ের সান্নিধ্য পেতে যারা দেরী করেন, কিংবা মেয়ে হয়ে ছেলের সান্নিধ্য পেতে যারা দেরী করেন; আবারো বলছি বুকে হাত দিয়ে বলুন, আপনারা কি সুখী। ও আল্লাহ্‌, এরা কবে বুঝবে, শয়তানের ধোঁকা খুব দুর্বল! বুকে হাত দিয়ে বলুন, কোন মেয়ের ভালবাসা, মনোযোগ, সান্নিধ্য না পেয়ে বুক হাহাকার করে না? বুকে হাত দিয়ে বলুন, আপনি নিজেকে শারীরিক ভাবে নিজেই নিজের ক্ষতি করেন না? নিজের মনকে নিজেই oppress করেন না? হ্যাঁ বিয়ে না করেও হয়তো এসব পাওয়া যায়, কিন্তু ব্যভিচার করলে আর তো বলার কিছু থাকে না। তাহলে কেন এসব খোঁড়া যুক্তি দিয়ে নিজেকে নিজে প্রতারণা করেন?


জীবরাইলঃ মদন, তুমি তো দেখছি, মেয়ের সাথে সাথে মেয়ের ফ্যামিলীর ব্যাপারেও ডিমান্ড করেছ?

মদনঃ হ্যাঁ। জানোই তো জীবরাইল, আমাদের দেশে বিয়ে শুধু ছেলে-মেয়ের মাঝে হয় না, ফ্যামিলীও দরকার।

জীবরাইলঃ না ঠিক আছে বুঝলাম। কিন্তু মেয়ের চাচা, মামা, খালা এদের দিয়ে তুমি কি করবা?

মদনঃ আমি যখন এদের বাসায় বেড়াতে যাব, বা সমাজে উঠতে বসতে হবে না, এদের সাথে?

জীবরাইলঃ কিন্তু একদম সবার অবস্থা তো ভাল হয় না। সবাই তো established হয় না। আর এদের সাথে দেখা হবে বছরের ২/১ দিন তোমার। আর এরা যেমনই হোক, তার সাথে তোমার সুখী হওয়ার না হওয়ার কি আছে?

মদনঃ জীবরাইল, তুমি আসলেই একটা মদন। তুমি এসব বুঝবা না। তুমি তো আর মানুষ না, তাই তোমার মানুষ কি বলবে তা ভাবতে হয় না।


পাছে লোকে কিছু বলে

করিতে পারিনা কাজ, সদা ভয় সদা লাজ.পাছে লোকে কিছু বলে। মানুষখুবই আজীব। সে শুধু অন্য লোকের কথা ভাবে যে সে এই কাজটা করলে তার সম্পর্কে লোকে কি ভাববে? হায়, হায়, আমরা এত পরাধীন। একদম নিজের মনের কাছে নিজে বন্দী! সেই লোকদের কথা ভাবছি, যারা বিপদের দিনে সামান্যতম সাহায্য করবে না। অথচ নিজের কথাই নিজে ভাবছি না। পাছে লোকে কিছু ভাবেএই জিনিসটা কেবল বিয়ে না, আমাদের পড়াশোনা, আমাদের কাজ, আমার কথা আমাদের উন্নয়ন সব কিছুর ভিতর এক অনেক বড় শিকল। যেই দিন এই শীকল থেকে বের হতে পারব না, আমার ব্যক্তিগত দৃঢ় বিশ্বাস আমরা সামনে এগুতে পারবো না। একটা বৃত্তের ভিতরই ঘুরপাক খাবো।